শনিবার, ৪ জুলাই, ২০১৫

EK 584
প্লেনে বসে আছি। আমার গন্তব্য দুবাই সেখানে ১২ ঘণ্টা কিভাবে কাটাবো তা নিয়ে কিঞ্চিত চিন্তিত । যদি ঘুমিয়ে পড়ি প্লেন যদি আমাকে রেখে নিউ ইয়র্ক চলে যায় তখন কি হবে ? এসব আকাশ পাতাল ভাবনায় আছি তখন এয়ার হোস্টেস খাবার নিয়ে এলো। সামনের ট্রে খুলে দিলাম। আমার পাশে বসা দুই যাত্রী এয়ার হোস্টেসকে ইশারা ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিল তারা খাবে না। আমি যখন খাচ্ছি তারা যথেষ্ট আগ্রহ নিয়ে আমার খাওয়া দেখছে ! কি যন্ত্রণা। কিছু বলতেও পারছি না। যাত্রীদের দুজনেরই কমলা রঙের ওভারল পরা ,মাথায় তেল জবজব করছে। আমি খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘণ্টা তিনেক ঘুমানোর পর জেগে উঠেছি প্লেন আরও ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই দুবাইতে ল্যান্ড করবে। প্রচণ্ড কফির তেষ্টা পেয়েছে। সিট থেকে উঠে গিয়ে নিজের জন্য এককাপ কফি নিয়ে এলাম। এয়ার হোস্টেস মহিলা চমৎকার এক মানবী তিনি আমাকে দুটো আপেল আর কিছু বিস্কিট দিলেন কফির সাথে। আমি আপেল খাই না খেলেই গলা চুলকায় কিন্তু মহিলা যেহেতু খাতির করে দিয়েছেন ,না বলতে পারলাম না। আমি আপেল দুটো সিটের সামনের পকেটে রেখে দিলাম। কফি খাচ্ছি (পান করছি হা হা ) আমার পাশের যাত্রী এই প্রথম মুখ খুললেন ভাইজান , আপনে যে এই খাবার আনলেন কত নিলো ?এবার আমার অবাক হবার পালা। আমি বললাম কত নিলো মানে ? এগুলো তো ফ্রি। যাত্রীর পরবর্তী প্রশ্ন আগে যে খাবার খেলেন ঐটাও ফিরি ? আমি বললাম হ্যাঁ। আমি বললাম আপনারা খাবার খেলেন না কেন? তার উত্তর, আমরা তো খালি প্লেনের টিকেটের পয়সা দিছি খাওনের পয়সা তো দেই নাই তাছাড়া বরিশাল থাইকা যখনি ঢাকায় ইস্টিমারে গেছি তহনতো খাওন দাওন কিন্না খাইতাম না বাড়িত থাইকা চিড়া ,মুড়ি গুর নিয়া আসতাম তবে টেরেনে দেখছি ক্যান্টিনের লোকজন খাবার নিয়া হাঁটে পয়সা দিলে খাওন কিন্যা খাওয়া যায়। আমার মনটা বেশ খারাপ হলো হয়তবা গতরাতে মানুষগুলো খাবার খেয়ে স্টিমারে চেপেছে খিদেয় হয়ত তার পেট চো চো করছে আমি এয়ার হোস্টেসকে ডেকে তাদের খাবারের ব্যবস্তা করলাম। এ মানুষগুলোই মরুভূমির তীব্র রোদ উপেক্ষা করে ডলার ,রিয়াল ইত্যাদি পাঠিয়ে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখে ।সচল রাখে একটি অচল দেশকে !

বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০১৫

12th May 2014 

অপ্রত্যাশিত ছুটি আজ কাজ নেই। ভাবলাম ডাক্তার দেখাই তাছাড়া অনেক দিন ডাক্তারের কাছে যাই না গেলেই মজাজ গরম হয় এটা বেড়ে গেছে ওটা বেড়ে গেছে বয়েস ৪০ ছুঁই ছুঁই আরে ভাই আমি তো আর ২৪ বছরের তরুণ না। যাইহোক ডাক্তার সাহেব চেক আপ করলেন, রক্ত নিলেন, এবার রেজাল্ট এর অপেক্ষা। বাসায় ফিরলাম ছোট মেয়েটি বাবাকে দেখে অবাক তুমি কাজে যাওনি ? কি হয়েছে ? আমরা কি গরিব হয়ে যাব ? আমার এই ৭ বছরের মেয়েটি অসম্ভব বাস্তববাদী সে জানে আমেরিকাতে কাজ না করলে ভাত নাই as simple as that আমি বললাম মা, আই উইল ওয়ার্ক টুমরো আবার জিগ্যেস করলাম ডিনার এ কি খেতে চাও ? সে বলল I will eat anyting home cooked আমার চোখে জল এসে গেল আমি খুবই আবেগপ্রবণ একজন মানুষ যদিও এ আবেগ লুকানো আবেগ আমি কিছু বললাম না অবাক হলাম ৭ বছর বয়েসের একটি বাচ্চার চিন্তাধারায় । আমার ৭ বছর বয়েসে আমি আমার মেয়ের মত এতটা বুদ্ধিমান ছিলাম না ধন্য আমার এ জীবন আমি এ জীবনে আর কিছুই চাই না আল্লাহ ত্হালা আমার মেয়ে গুলোকে অনেক বড় বানান এই আমার কামনা । জীবনের প্রথম কম্পিউটারে বাংলা লিখতে বসেছি। সবাইকে বাংলায় স্টেটাস লিখতে দেখি। বানানে ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
শুভরাত্রি

16th May 2014 
চমৎকার একটি দিন আজ অন্তত আমার জন্য নিউ ইয়র্ক এর আকাশে মেঘের ঘনঘটা এই বুঝি মুষল ধারে বৃষ্টি নামবে অনেকটা কাল কালবৈশেখী মতো। এদেশের মানুষের কাছে বৃষ্টি অসয্যকর এরা বৃষ্টি পছন্দ করে না, এদের সাহিত্যে বৃষ্টির কোন স্থান নেই না থাকারই কথা। ইংরেজি সাহিত্য জুড়ে আছে তুষার ঝর আর উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ড এর বিস্তর গুনগান। নিউ ইয়র্ক শহরে বৃষ্টি হলে এক শ্রেনীর মানুষ বৃষ্টিকে পুঁজি করে টু পাইস কামানোর ধান্দায় লেগে যায় এরা খেটে খাওয়া মানুষ এটা ওটা রাস্তায় বিক্রি করে বৃষ্টি হলে ছাতা বিক্রির ধুম পরে যায়, ছাতার মুল্য পাচ ডলার ছাতার জীবনকাল আধা ঘন্টা। আরেক শ্রেনীর মানুষ উপকৃত হয় তারা হলো যারা কাব ট্যাক্সি চালায় এখানে বলে রাখি ১০০% ট্যাক্সি চালকদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ৩২% একজন বাংলাদেশি হিসেবে বৃষ্টি আমার অসম্বব প্রিয় যখনই বৃষ্টি শুরু হয় আমি আমার মধ্যে এক ধরনের চাঞ্চল্য দেখি, নস্টালজিয়া আমাকে ছেয়ে বসে ,মনে পরে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলা ,বৃষ্টিতে ভিজে স্কুল থেকে বাসায় ফেরা যখন তরুণ বয়স বন্ধুদের সাথে মোটরসাইকেল চড়া বৃষ্টির ফোটার আঘাত শরীরে তীরের মত বিদ্ধ হচ্ছে। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে গাড়ির গ্লাস বন্ধ করে ভিতরে সিগারেট টানা এ সবই আজ কেবল শোক স্মৃতি এ দিন আর কখনো ফিরে আসবে না অসম্বভ সুন্দর এই দিনগুলো আজ হারিয়ে গেছে চিরতরে আহা একটি ক্ষণের জন্য যদি ফিরে যেতাম আমার ছেলেবেলায়।
20 th May 2014
এ দেশের অনেক কিছুই ভালো আবার কিছু জিনিস আছে যা দেখলে গা জ্বলে ওটে। এ সমাজের দুই একটা জিনিস আমাকে অসম্বভ পীড়া দেয় যার প্রথমটা হলো সমকামিতা বাচ্চা কে নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন হটা দেখলেন দুইজন পুর্ণবয়েস্ক মানুষ বয়েস প্রায় ৫০ এর কাছাকাছি একে ওপরকে জড়িয়ে ধরে চুমু খচ্ছে আপনি অপ্রস্তুত আপনার বাচ্চা আপনার দিকে প্রশ্নভুদক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে বাচ্চার বয়েস যদি ১০/১২ বছর হয় সে কিছু বলবে না এ বয়েসে এরা অনেক কিছু জানে ও বুঝে কিন্তু যদি বাচ্চাটি ৬/৭ বছর বয়েসের হয় তাহলে বিরাট সমস্যা Dad what are they doing ?আপনি কি উত্তর দেবেন এই দেশটি হলো রাইট (হিউমান রাইটস) এর দেশ ,এই রাইট ওই রাইট আমার যা ইচ্ছা আমি করব কারো এখানে বলার কিছু নেই এদের সমাজটাই এ রকম আমেরিকার অনেকগুলো স্টেট এ সমকামীদের বিয়ে এখন বৈধ।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে "আমদেরকে অবাধে রাস্তায় গাজা টানার অধিকার দিতে হবে " এখানে বলে রাখি এদের মত গাজাখোর জাতি পৃথিবীতে দুটো আছে কিনা আমার সন্দেহ হয় এখানে ৫০/৬০% অ্যাডাল্ট রেগুলার গাজা টানে অনেক স্টেট এ গাজা টানা পুরোপরি লিগাল ডাক্তার ও রুগী কে গঞ্জিকা সেবনের প্রেসক্রিপশন দেন এটাকে বলে মেডিকেল মারিজুয়ানা। মেডিকেল মারিজুয়ানা ফলাতে স্পেশাল লাইসেন্স থাকতে হয় বিক্রির লাভের উপর কর অনেক এরা পুজিবাদী সমাজ সবকিছুতেই এরা কর বসাবে সারা দেশটায় চলে করের উপর।